Dry Oyester Mushrooms-200 gms
Dry Oyester Mushrooms-200 gms

Dry Oyester Mushrooms-200 gms

320 TK. 400TK.

-20%

Availability: In stock

Brand: Khaya

QTY:

মাশরুম : ডায়াবেটিসসহ অনেক রোগের ওষুধ

 
মাশরুম হলো মহৌষধি গুণসম্পন্ন অত্যন্ত পুষ্টিকর ছত্রাকজাতীয় সবজি। পবিত্র আল কুরআন ও হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, মাশরুম আল্লাহপাকের প্রদত্ত স্বর্গীয় খাবার, যা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক গুণসম্পন্ন একটি মহৌষধ। মাশরুমে আমিষ, শর্করা, চর্বি, মিনারেল ও ভিটামিন (সব); চর্বি ও শর্করা (স্বল্প);  ফলিক অ্যাসিড, লৌহ-প্রভৃতি ওষুধি গুণাগুণ ও উপাদান থাকায় এটি মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বর্ধনপূর্বক ডায়াবেটিস; ব্লাডপ্রেসার; কিডনি ও এলার্জি; যৌনরোগ ও অক্ষমতা; আলসার, বাতের ব্যথা প্রভৃতি জটিল ও কঠিন দুরারোগ্য ব্যাধি মুক্ত করে নিরাময়কের মহাভূমিকা পালন করে থাকে।

আল-কুরআন ও হাদিসের ভাষায় এটিকে একটি স্বর্গীয় খাবার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যে কারণে এটি রোগ নিরাময়ের এক আশ্চর্য নিরাময়ক।
আদিকাল থেকে মাশরুমের ব্যবহার
চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, কানাডাসহ পৃথিবীর বহু দেশের মানুষ মাশরুম আদিকাল থেকে খেয়ে আসছে। আমাদের দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে মাশরুম বেশি জন্মে এবং পাহাড়ি লোকেরা এটি বেশি খায়।
বিশুদ্ধ সবজি হিসেবে মাশরুমের ব্যবহার
আল্লাহপাক মানুষের শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়েছেন শাকসবজি এবং ফলমূলে। ভিটামিন ও মিনারেলই মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। শাকসবজি এবং ফলমূলে ভিটামিন ও মিনারেলের পরিমাণ বেশি। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, সুস্থ সবল জীবনযাপনের জন্য একজন মানুষের দৈনিক ২০০-২৫০ গ্রাম সবজি এবং ফল-ফলাদি খেতে হয়। এই পরিমাণমতো খাওয়া আমাদের অনেকের পক্ষে সম্ভবপর হয় না, যে কারণে আমরা অপুষ্টি ও বিভিন্ন রোগে ভুগী।
মাশরুমের পুষ্টিগুণ
আমরা দৈনন্দিন যেসব খাবার গ্রহণ করে থাকি সেগুলোর চেয়ে মাশরুমের পুষ্টিগুণ তুলনামূলকভাবে বেশি বলে এটি শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে শরীর সুস্থ সবল রাখতে অতি মাত্রায় সাহায্য করে।
মাশরুমের পুষ্টি ভ্যালু তুলনামূলকভাবে অত্যধিক এবং এই প্রোটিন অতি উন্নতমানের এবং মানবদেহের জন্য অতিশয় উপকারী। একটি পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো মানবদেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যাসিডের পরিমাণের উপস্থিতি। মাশরুমে অতীব প্রয়োজনীয় এই ৯টি এমাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান। অন্যান্য প্রাণিজ আমিশ যেমন-মাছ, গোশত, ডিম অতি নামী-দামি খাবার হলেও এতে চর্বি সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকায় তা অতি মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে, যার ফলে মেদ-ভুঁড়ির সৃষ্টি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ প্রভৃতি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
পক্ষান্তরে মাশরুমের প্রোটিনে-ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অতি স্বল্প এবং কোলেস্টেরল ভাঙার উপাদান-লোভস্ট্রাটিন, এন্টাডেনিন, ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন থাকায় শরীরের কোলেস্টেরল জমতে পারে না বরং মাশরুম খেলে শরীরে বহু দিনের জমানো কোলেস্টেরল ধীরে ধীরে বিনষ্ট হয়ে যায় এবং শরীর হালকা-পাতলা হয়ে রোগমুক্ত হয়।
১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫-৩৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা যা অতি নামী-দামি খাবার হিসেবে মাছ, গোশত, ডিম খেয়ে থাকি তার মধ্যে ১০০ গ্রাম মাছ, গোশত ও ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ হলো ১৬-২২ গ্রাম, ২২-২৫ গ্রাম ও ১৩ গ্রাম মাত্র।
মাশরুমে ভিটামিন ও মিনারেল
মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সৃষ্টি করাই ভিটামিন ও মিনারেলের প্রধান কাজ। শরীরের চাহিদামতো প্রতিদিন ভিটামিন ও মিনারেল খেতে না পারলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা ক্রমশ দুর্বল হয়ে নানারূপ জটিল রোগে আক্রান্ত হতে হয়। প্রাকৃতিকভাবে মাশরুমেই সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান। ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ৫৭-৬০ শতাংশ ভিটামিন ও মিনারেল (অত্যাবশ্যকীয় ট্রেস ইলেমেন্টসহ) রয়েছে। ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুমে থায়ামিন (বি-১), রিবোফাভিন (বি-২), নায়াসিন, ফসফরাস, লৌহ, ক্যালসিয়াম ও কপার-৪.৮-৮.৯ মি: গ্রা:, ৩.৭-৪.৭ মি: গ্রা:, ৪২-১০৮ মি: গ্রা:, ৭০৮-১৩৪৮ মি: গ্রা:, ১৫-১৭ মি: গ্রা:, ৩৩-১৯৯ মি: গ্রা: ও ১২-২২ মি: গ্রা: ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে।
কিভাবে খেতে হবে
কাঁচা এবং শুকনা মাশরুম ১৫ বা ২০ মিনিট ফুটানো গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে ধুয়ে পানি ফেলে দিয়ে ফ্রাই বা সবজির মতো করে, তরকারি বা মাছ গোশতের মধ্যে দিয়ে বা বিবিধ প্রকারের নাস্তা ও মুখরোচক খাবার তৈরি করে খাওয়া যায়।
মাশরুম কোন হারাম সবজি নয়, সম্পূর্ণ হালাল 
 
মাশরুম একটি বহুগুনী পরস্বাদু সবজি। আমরা অনেকে মাশরুম খুব পছন্দ করি। অনেকে আবার এটিকে ব্যাঙের ছাতা ভেবে এটিকে হারাম খাদ্যের সাথে তুলনা করে থাকি। আসলে আমাদের এই ধরানাটি সম্পূনূ ভূল। কারন মাশরুম আর ব্যঙের ছাতা এক জিনিস নয়। ব্যাঙের ছাতা যেখানে সেখানে গজিয়ে উঠে তা অপরিচ্ছন্ন ও বিষাক্ত। আর মাশরুম পরিচ্ছন্ন ভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতেতে বীজ দ্বারা চাষ করা হয়। শুধু তাই নয় পবিত্ত্র কোরআন ও হাদীসে মাশরুম কে অত্যান্ত মর্যদাকর খাবারের সাথে তুলনা করা হয়েছে। সহীহ বুখারী শরীফে হযরত মোহাম্মদ (স:) বলেছেন, “আল কামতু মিনাল মান্না ওয়া মাহা সাফা আল্ আইন” এর অর্থ “মাশরুম এক শ্রেণীর মান্না ও এর রস চোখের জন্য ঔষধ বিশেষ”। আর এ সম্পর্কে কোরআনে সূরা আল বাকারার ৫৭ নম্বরে আল্লাহ বলেন “অযাল্লানা আলাইকুমুল গামামা ওয়া আনযালনা আলাইকুমুল মান্না-ওয়াস-সালাওয়া কুলুমিন তায়্যিবাতি মা রাযাক্বনাকুম, ওমা জলামুনা আলাকিন কানূ আনফুছাহুম ইয়াযলিমুন” এর অর্থ আমি মেঘমালা দিয়ে তোমাদের উপর ছায়াদান করেছি এবং তোমাদের জন্য তোমাদের জন্য অত্যান্ত সম্মানিত খাবার পাঠিয়েছি মান্না ওয়া সালাওয়া। অতএব মাশরুম যে একটি হালাল খাবার তা নিয়ে এখন আমাদের কারো মাঝে আর কোন সন্দেহ নেই। আসুন আমরা সবাই বেশী বেশী করে মাশরুম খাই, প্রতিদিনের খাবারের সাখে মাশরুম যুক্ত করি। সুস্থ্য ও সুন্দর থাকি।

মাশরুম কেন খাবেন ?  

 
মাশরুম ক্লোরোফিলবিহীন ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ এবং নতুন ধরণের সবজি যা সম্পূর্ণ হালাল,সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও উচ্চ খাদ্যশক্তি এবং ভেষজগুণে ভরপুর।এর মধ্যে ২৫-৩০% প্রোটিন আছে যা অত্যন্ত উন্নত ও নির্ভেজাল। এতে উপকারী শর্করা, চর্বি আছে। যে কারণে মাশরুম বিভিন্ন জটিল রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। মাশরুমের পুষ্টিগুণের পাশাপাশি যে সব ঔষধিগুণ পাওয়া যায় তা নিম্নরূপঃ
• গর্ভবতী মা ও শিশুরোগ প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের এমন সমন্বয় আছে যা শরীরের “ইমিউন সিষ্টেমকে” উন্নত করে। নিয়োসিন ও অ্যাসকরবিক এসিড বা ভিটামিন সি’র প্রাচুর্য থাকায় মাশরুম স্কার্ভি, পেলেগ্রা প্রভৃতি শিশুরোগসহ গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধে উপকারী।
• বহুমুত্র প্রতিরোধেঃ
বহুমুত্র বা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের শর্করা ও ফ্যাট জাতীয় খাবার ক্ষতিকারক। ফ্যাট ও শর্করা কম এবং আঁশ বেশি থাকায় বহুমুত্র বা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মাশরুম বিশেষ উপকারী ও ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাবার। নিয়মিত খেলে ব্লাড সুগার কমিয়ে আনা সম্ভব।
• উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে কোলেস্টরেল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোভাষ্টটিন, এনটাডেনিন, কিটিন এবং ভিটামিন বি,সি ও ডি থাকায় নিয়মিত মাশরুম খেলে উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার) ও হৃদরোগ নিরাময় হয়।
• চর্মরোগ প্রতিরোধেঃ
নানা ধরণের চর্মরোগ নিরাময়ে মাশরুম বিশেষভাবে উপকারী। ঝিনুক মাশরুমের নির্যাস থেকে খুশকি প্রতিরোধী ঔষধ তৈরী করা হয়।
• দাঁত ও হাড় গঠনেঃ
মাশরুমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম,ফসফরাস ও ভিটামিন-ডি আছে। শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে এই উপাদানগুলো অত্যন্ত কার্যকরী।
• ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধেঃ
মাশরুমের বেটা-ডি, ল্যামপট্রোল, টারপিনওয়েড ও বেনজোপাইরিন আছে যা ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধ করে। ফ্রান্সবাসীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ মাশরুম খান বলে গত এক শতাব্দী ধরে ক্যান্সার রোগের প্রাদুর্ভাব কম বলে দাবী করা হয়। সম্প্রতি জাপানের জাতীয় ক্যান্সার ইনষ্টিটিউটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাশরুমের ক্যান্সার প্রতিহত করার ক্ষমতা আছে।
• এইডস প্রতিরোধকঃ
মাশরুমে ট্রাইটারপিন থাকতে বর্তমানে এটি বিশ্বে এইডস প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ।
• আমাশয় রোগেঃ
মাশরুমে ইলুডিন এম ও এস থাকাতে আমাশয়ে উপকারী।
• হাইপার টেনশনঃ
মাশরুমে স্ফিংগলিপিড এবং ভিটামিন-১২ বেশি থাকায় স্নায়ুতন্ত্র ও স্পাইনাল কর্ড সুস্থ্য রাখে। তাই মাশরুম খেলে হাইপার টেনশন দুর হয় এবং মেরুদন্ড দৃঢ় থাকে।
• পেটের পীড়ায় বা সহজপাচ্য প্রোটিন যোগান দিতেঃ
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন আছে। এই প্রোটিন সহজপাচ্য, সুস্বাদু ও মুখরোচক। মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ এনজাইম বিশেষতঃ ট্রিপসিন এবং অগ্ন্যাশয় থেকে নির্গত জারকরস আছে বলে মাশরুম খাদ্য পরিপাক ও হজমে সাহায্য করে, রুচি বর্ধক এবং পেটের পীড়ায় নিরামায়ক।
• কিডনির রোগ প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে নিউক্লিক এসিড ও এন্টি এলার্জেন থাকায় এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় কিডনি রোগ ও এলার্জি রোগের প্রতিরোধক।
• চুল পড়া ও পাকা প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে সালফার সরবরাহকারী এমাইনো এসিড থাকায় এটা নিয়মিত খেলে চুল পড়া ও পাকা প্রতিরোধ করে।
• দৃষ্টিশক্তিঃ
মাশরুমের খনিজ লবণ চোখের দৃষ্টিশক্তি রক্ষার জন্যও সমাদৃত।
• হেপাটাইটিস-বি ও জন্ডিসঃ
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড ,লৌহ এবং লিংকজাই-৮ নামক এমাইনো এসিড থাকায় হেপাটাইটিস-বি ও জন্ডিসের প্রতিরোধক।
• এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতাঃ
শরীরে এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে, নিয়মিত মাশরুম খেলে তা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
মাশরুমের খাদ্যগুণ (প্রতি ১০০ গ্রামে)
MSH
আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখুন মাশরুম। মাশরুমের উপস্থিতি আপনার খাদ্যতালিকাকে করবে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও আকর্ষনীয়।

মাশরুম খান, রোগ থেকে বাঁচুন

 
 মাশরুম খান, রোগ থেকে বাঁচুন
 
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য তালিকায় বর্তমানে একটি পরিচিত নাম হল মাশরুম। যদিও কয়েক বছর আগেই মাশরুম খুব জনপ্রিয় কোন সবজ ছিল না। এর ব্যাপক চাষ এবং সহজলভ্যতাই মাশরুমকে আমাদের খাদ্য তালিকায় ঠাঁই পেতে সাহায্য করেছে। 

মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি হালাল সবজি। এর বিশেষ দিক হচ্ছে এতে শর্করা ও চর্বির পরিমাণ খুব কম এবং মানব দেহের প্রয়োজনীয় আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণের পরিমাণ বেশি। 

 

প্রতি ১০০ গ্রাম মাশরুম পাউডার ২৫-৩৫ ভাগ উন্নতমানের আমিষ, ১০-১৫ ভাগ ভিটামিন ও খনিজ লবণ, ৪০-৫০ ভাগ শর্করা ও আঁশ এবং ৪-৫ ভাগ চর্বি আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। 
 
মাশরুম শরীরের জমাকৃত কোলেস্টেরল মুক্ত করে এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, ক্যান্সার, মেদভুঁড়ি, জন্ডিস, ডেঙ্গুজ্বর, প্রভৃতি রোগের প্রতিরোধক, নিরাময়ক বা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। 
 
মাশরুম মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে এটি জনপ্রিয় মূল্যবান খাদ্য হিসেবে সুপরিচিত।
ওয়েস্টার মাশরুমের যত গুনঃ 
১। ওয়েস্টার মাশরুমে আরগোথিওনিন নামক অ্যামাইনো আসিড আছে যা গুরুত্বপূর্ন এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং রান্নার পরও অক্ষুণ্ণ থাকে। 
২। ওয়েস্টার মাশরুমে বেঞ্জালডিহাইড নামক উপাদান থাকায় এই মাশরুম এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। 

৩। এই মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে মান সম্মত প্রোটিন আছে (শুকনা ওজনের প্রায় ৩০%)
৪। এতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান যথাঃ জিংক, আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান।
৫। এই মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, নায়াসিন, ফলিক এসিড, ভিটামিন-বি২ ও ভিটামিন-বি৩ বর্তমান। 
৬। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য আঁশ থাকায় ইহা স্বাস্থের জন্য উপকারী।
৭। এতে ক্ষতিকারক চর্বি ও কার্ভাইড্রেট খুব কম পরিমাণে বিদ্যমান। 
৮। এই মাশরুম উচ্চ রক্ত চাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে ও মেদ ভুরি কমায়। 
৯। এতে স্টাটিন নামক উপাদান থাকায় রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও উচ্চ কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারের সাথে এই মাশরুম যোগ করলে এর ক্ষতির হাত থেকে বাচা যায়। 
১০। ক্যান্সার নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে এই মাশরুম। 
১১। হেপাটাইটিস-সি এর বিরুদ্ধে এই মাশরুম কাজ করে। 
১২। রক্ত স্বল্পতা, হাইপার এসিডিটি ও কোষ্ট কাঠিন্য দূরীকরণে সক্ষম এই মাশরুম।

ওজন কমাতে মাশরুম

মাশরুম একটি ভেজষ গুণ সম্পন্ন ও সামান্য ক্যালোরিযুক্ত খাবার। এই খাবারটি কিন্তু অতিরিক্ত ওজন কমাতেও সাহায্য করে। লন্ডন ইউনিভার্সিটি অফ বাফ্যালো’র পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পোর্টোবোলো প্রজাতির মাশরুম খাদকের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও ওজন কমায়।

স্কুল অফ পালবিক হেলথের পুষ্টিবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ও প্রধান গবেষক পিটার হ্যারোভ্যাথ জানিয়েছেন, চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মাশরুম কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। চিনি বা শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই যারা ওজন কমাতে চান তারা লাভবান হতে পারবেন।

পিটার জানিয়েছেন, আমাদের শরীরে প্রত্যেকটি কোষে শর্করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত শর্করা শরীরের কোষগুলো গ্রহণ করতে পারেনা। ফলে অতিরিক্ত শর্করা শরীরে মেদ হিসেবে জমা হয়। আর মাশরুম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখে।

গবেষণার অংশ হিসেবে মিষ্টি পানীয়ের প্রতিক্রিয়ায় শর্করার মাত্রা কেমন থাকে তা দেখার জন্য ১৯ থেকে ২৯ বছর বয়সী ৮ জন পুরুষ ও ১০ জন নারীকে দুই সপ্তাহ ধরে ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট পরীক্ষা করা হয়। এদের প্রত্যেককে সমান মিষ্টি তিন ধরনের পানীয় খাওয়ানো হয়। এই পানীয়ের মধ্যে ছিল ৭৫ গ্লুকোজ ড্রিঙ্ক, ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ড্রিঙ্কের সঙ্গে ৯.৫ গ্রাম পোর্টোবেলো পাউডার, ৯.৫ গ্রাম পোর্টোবেলো পাউডারের সঙ্গে সুগন্ধী পানি।

পরীক্ষার ফল হিসেবে দেখা যায়, গ্লুকোজ ড্রিঙ্কের সঙ্গে পোর্টোবেলো পাউডার খাওয়ার ফলে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা কমে গেছে।

এই গবেষণার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই পরীক্ষায় এটা স্পষ্ট যে মাশরুম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গ্রাহকের ওজনে ভারসাম্য রাখে। তবে এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ফল পান নারীরা।

মাশরুম

- উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

 

 
মাশরুম (ইংরেজি: Mushroom) এক ধরনের ছত্রাক এবং এদের অধিকাংশই ব্যাসিডিওমাইকোটা এবং কিছু অ্যাসকোমাইকোটার অন্তভুক্ত। অন্যান্য উদ্ভিদের ন্যায় মাশরুমের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য তৈরীর জন্য সূর্য থেকে আলোর প্রয়োজন পড়ে না। চীন, কোরিয়াসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশসমূহে কয়েক ধরনের খাদ্যোপযোগী মাশরুম রান্না করার মাধ্যমে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও আধুনিক খাবার হিসেবে মাশরুমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে। যে-সকল ব্যক্তি মাশরুম সংগ্রহ করে খায়, তারা মাইকোফেজিস্টস বা 'মাশরুম খাদক' হিসেবে পরিচিত হন। মাশরুম খোঁজার প্রক্রিয়াকে সাধারণতঃ মাশরুমিং বা মাশরুম শিকারী নামে অভিহিত করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপাদনকারী দেশরূপে পরিচিতি পেয়েছে। দেশটি বিশ্বের মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক মাশরুম উৎপাদনকারীরূপে স্বীকৃত। প্রতি বছর এক বিলিয়নেরও অধিক জনগোষ্ঠীর জন্য মাথাপিছু ২.৭ কিলোগ্রাম (৬.০ পা) উৎপাদন করে।

(এগারিকাস বিসপোরাস (AGARICUS BISPORUS) প্রজাতির মাশরুম বিশ্বের সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়)

পরিচ্ছেদসমূহ:

  •  প্রকারভেদ
  •  বৈশিষ্ট্যাবলী
  •  পুষ্টি উপাদান
  •  অন্য ব্যবহার
  •  তথ্যসূত্র
  •  বহিঃসংযোগ
    • ৬.১ সনাক্তকরণ
    • ৬.২ গবেষণা সমিতি

প্রকারভেদ

  • এগারিক্স - একাধারে এ জাতীয় মাশরুম খাবার উপযোগী বা ভক্ষণযোগ্য, বিষাক্ত এবং মাদক প্রকৃতির হয়ে থাকে।
  • বোলেটস/Boletes - এই গ্রুপের আধিকাংশই ভক্ষণযোগ্য এবং অনেকের কাছে সুস্বাদুকর খাদ্যরূপে বিবেচনা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে Borofutus (বড়ফুটুস) নামের একটি গণের/জেনাসের মাশরুম প্রথমবারের মতো ২০১২ সালে আবিস্কৃত হয়েছে এবং এটি Borofutus dhakanus (বড়ফুটুস ঢাকানুস) নামে প্রকাশ হয়েছে।[৫]
  • ব্র্যাকেট ফাঙ্গি
  • চান্টারেলেস - ভক্ষণযোগ্য।
  • কোরাল ফাঙ্গি - ভক্ষণযোগ্য।
  • কাপ ফাঙ্গি - সচরাচর খাবার উপযোগী।
  • জেলি ফাঙ্গি - সচরাচর খাবার উপযোগী হলেও খেতে তেমন সুস্বাদু নয়।
  • পলিপোরেস - বোলেটেসের অনুরূপ অর্থাৎ ভক্ষণযোগ্য এবং অনেক লোকের কাছে সুস্বাদুকর খাদ্যরূপে বিবেচিত।
  • সাইকেডেলিক - এটি শ্রুমস নামেও পরিচিত।
  • পাফবলস - সচরাচর খাবার উপযোগী।
  • স্টিঙ্কহর্নস - খাবার উপযোগী হলেও গন্ধ তেমন চমকপ্রদ নয়।
  • টুথ ফাঙ্গি
বন-জঙ্গল থেকে সঠিক ধরনের মাশরুম সংগ্রহ করা খুবই কঠিন কাজ। কারণ, অধিকাংশ প্রজাতির মাশরুমই একই ধরনের দেখতে। সেজন্যে মাশরুম সংগ্রহকারীকে রাসায়নিক উপাদান সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হয়। খাবার উপযোগী মাশরুম বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্নভাবে রান্না করে খেতে হয়। এ ধরনের মাশরুম সাধারণতঃ খামারে চাষাবাদ করা হয়। তবে, বিশ্বের অনেক স্থানের সাধারণ জনগণ শৈশবকাল থেকেই ভক্ষণযোগ্য ও সুস্বাদু প্রকৃতির বুনো মাশরুমের সাথে পরিচিত থাকেন।

বৈশিষ্ট্যাবলী

পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রায় চৌদ্দ হাজার প্রজাতির মাশরুমের কথা জানা যায়। অনেক প্রজাতির মাশরুমই এক রাতের মধ্যেই উৎপাদিত হতে দেখা যায়। অর্থাৎ, খুব দ্রুততার সাথে এর বৃদ্ধি ও প্রসার ঘটতে পারে। তবে অধিকাংশই ধীরে ধীরে বড় হয়। আবাদকৃত মাশরুম আকারে ক্ষুদ্রাকৃতির হয়ে থাকে। খাবার উপযোগী অংশটি অল্প কিছুদিন সতেজ থাকে। বিশ্বের অধিকাংশ মাশরুমেই একটি দণ্ড এবং ছাতার ন্যায় একটি টুপি থাকে। কখনো কখনো ছত্রাকজাতীয় অপুষ্পক উদ্ভিদের টুপির নিম্নাংশে বীজ কিংবা অঙ্কুর থাকে।
আরমিলারিয়া সোলিডিপেস (সাবেক আরমিলারিয়া ওস্টোয়ে) প্রজাতির মাশরুমের আবাসস্থল হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মালহিউর ন্যাশনাল ফরেস্টে দেখা যায় যা প্রায় ২,৪০০ বছরের পুরনো ও প্রাচীনতমরূপে আখ্যায়িত। প্রায় ২,২০০ একর (৮.৯ কিমি) আয়তনে বিস্তৃত হয়ে আছে।

মাশরুম বৃত্তান্ত……

 

আপু তুমি যে ব্যাঙের ছাতা বানাও, আমাকে দেখাবে? পাঁচ বছরের রাফাতের কথা শুনে মনে মনেই হাসল সায়রা। ছোটকালে মাটিতে গজানো ওপরে ছাদ আর নিচে বাটওয়ালা ছাতার মত রঙ-বেরঙের অদ্ভুত বস্তুগুলোকে সেও ব্যাঙের ছাতাই ভাবতো ব্যাঙরাও বুঝি সর্দি হওয়ার ভয়ে বৃষ্টির সময় এই ছাতাগুলোর নিচেই আশ্রয় নেয়। নিজের ঘরের ছোট্ট একটা জায়গায় প্রায় ছয় মাস ধরে মাশরুম চাষ করছে সায়রা । তার এ কাজকর্মে পরিবারের সদস্যরাও প্রথম প্রথম খুব অবাক হয়েছিল। ফুলের গাছ, ফলের গাছ, বাহারি পাতাবাহার এমনকি ক্যাকটাস হলেও একটা কথা ছিল। এসব রেখে মাশরুমই কেন? কিইবা এমন এর মাহাত্ম্য?

চলুন তবে মাশরুম নামের এই অদ্ভুত বস্তুটার মাহাত্ম্য সম্পর্কে একটু জেনে আসি।

ছত্রাক জগত বা কিংডমের উচ্চতর শ্রেণীর সদস্য মাশরুম। এদের ওপরের ছাতার মত অংশ, যেটা আমরা দেখতে পাই, তাকে বিজ্ঞানীরা বলেন ফ্রুটিং বডি আর মাটির নিচে অবস্থান করে গাছের শিকড় সদৃশ মাইসেলিয়াম।

মাশরুমকে মানুষ চিনেছে আজ অনেক দিন হলো। চাইনিজ এবং মিশরীয়রাই মূলত সর্বপ্রথম মাশরুমের গুণাগুণ সম্পর্কে অবহিত হয়। প্রাচীন মিশরের রাজকীয় পরিবারের সদস্যরা মাশরুমকে খাদ্যতালিকায় রাখত রাজকীয় খাদ্য হিসেবে। তাদের বিশ্বাস ছিল, এতে আছে অমরত্ব লাভের উপাদান । সবুজ মাঠে বা গহীন বনে গজিয়ে ওঠা বৃত্তাকারে সাজানো মাশরুমগুলো স্বর্গ থেকে নেমে আসা পরীদের নৃত্যের পদচিহ্ন অনুসারেই তৈরি হয়েছে- প্রাচীনকালের লোকদের এই ধারণা অনুসারে এসব মাশরুম চক্রের নাম দেওয়া হয় fairy ring। 

মাশরুমে রয়েছে মানুষের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নতমানের আমিষ, শর্করা, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও ফাইবার। দেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বি ও অতিরিক্ত ক্যালরি এতে অত্যন্ত কম পরিমাণে থাকে । মাশরুমে উপস্থিত ফাইবার দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে মেদভূড়ি ও উচ্চরক্তচাপের সম্ভাবনা অনেকাংশে রোধ করে। এসব ছাড়াও দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও দেহকোষ কর্মক্ষম রাখার অন্যতম উপাদান পটাশিয়ামও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে মাশরুমে।

বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতেও মাশরুম ব্যবহৃত হয়, যেমন এর ছত্রাক, ভাইরাস ও প্রোটোজোয়া বিরোধী ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক। বিভিন্ন মাশরুমের ক্যান্সারবিরোধী জিনকে কাজে লাগানো হচ্ছে ক্যান্সার চিকিৎসা ও ক্যান্সার রোগীদের আয়ু বৃদ্ধির কাজে। ডায়াবেটিস রোগীদের hyperglycemia বা রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে পারে মাশরুম।

পরিবেশ দূষণ রোধেও মাশরুমের ভূমিকা অনন্য । বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম তেল বা পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বনকে বিশ্লেষণ করে পরিবেশবান্ধব উপাদান তৈরি করতে পারে। এ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তেল দ্বারা দূষিত পানিকে খুব অল্প খরচেই পরিশোধন করা সম্ভব। এমনকি রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে মাশরুমকে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ডিটারজেন্ট তৈরিতেও ব্যবহৃত হয় মাশরুম।

এ তো গেল মাশরুমের সাধারণ গুণাবলি, এর কিছু তাক-লাগানো বৈশিষ্ট্যও আছে। পৃথিবীতে প্রায় ৭০ ধরণের মাশরুম আছে যারা আক্ষরিক অর্থেই রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে আলো ছড়াতে সক্ষম। ১৮৪০ সালে ব্রাজিলে পাওয়া flor-de-coco এর আলো এতটাই তীব্র যে সেই আলোতে অনায়াসে বইপত্র পড়া যায়।

সব মাশরুমই যে আমাদের জন্য উপকারী, তা কিন্তু নয়। বিষাক্ত মাশরুম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। প্রাচীন ঐতিহাসিকদের মতে, রোম সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট ক্লদিয়াসকে তার স্ত্রী আগ্রিপ্পিনা বিষাক্ত মাশরুম খাইয়ে হত্যা করেছিল।  বিষাক্ত মাশরুম সনাক্তকরণের বিভিন্ন উপায় আগে প্রচলিত ছিল। রূপার চামচ দিয়ে রান্না করার সময় চামচটি কালো হয়েগেলে ধরে নেওয়া হত মাশরুমটি বিষাক্ত। তবে পূর্বের এই পদ্ধতিগুলোর কোনটিই এখন আর প্রচলিত নেই।বিশেষজ্ঞ ব্যতীত আমাদের মত সাধারণ মানুষের পক্ষে বিষাক্ত মাশরুম আর খাদ্যোপযোগী মাশরুমের মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিলই বটে।

ভোজনবিলাসী বলে আমরা বাঙালিরা বেশ পরিচিত- পেটের ক্ষিদে মিটলেই আমরা সন্তুষ্ট। কী খাচ্ছি- তার পুষ্টিগুণই বা কতটুকু, তা দেহের উলটো ক্ষতি করছে কিনা- তা নিয়ে আমরা মোটেও মাথা ঘামাই না। তাই হয়ত উনিশ শতকে কবিগুরু তার কবিতায় আমাদের কটাক্ষ করে বলেছিলেন- “মাথায় ছোট বহরে বড়, বাঙালি সন্তান” মাশরুমের অন্যান্য উপকারী দিক বাদ দিয়ে যদি শুধুমাত্র খাদ্যগুণের কথাই ধরা হয়, তাও কিন্তু ব্যাপক। শুধু তাই নয়,পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্দ্রতা, তাপমাত্রা আর আলোর ব্যবস্থা থাকলে অল্প খরচে ঘরোয়া পরিবেশেই, কাঠের গুঁড়া আর খড়কুটোতেও এদের উৎপাদন করা সম্ভব। তাই পুষ্টিগুণের কথা চিন্তা করে হলেও যদি মাশরুমকে খাদ্য তালিকায় স্থান দেওয়া যায় তাহলে একদিকে যেমন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে বহরে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমে যায় অনেকাংশেই।

মাশরুম থেকে তৈরী খাদ্য

 
প্রাচীন রোমে মাশরুমের জনপ্রিয়তা এত ব্যাপক ছিল যে, একে বলা হতো ‘ঈশ্বরের খাবার’। ১৭০০ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুমের চাষ শুরু হয়। খাদ্য ছাড়াও বিভিন্ন উল ও রং তৈরিতে এটি ব্যবহার হয়। সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবারের নাম মাশরুম। এর স্ট্যান্ডার্ড নাম ‘Agricus bisporus’ আমাদের দেশে খাদ্য হিসেবে এর প্রচলন খুব বেশিদিন না হলেও বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা অনেক। মুখরোচক খাদ্য হিসেবে এর প্রচলন শুরু হয় প্রাচীন মিসরে। প্রায় তিন হাজারেরও বেশি সময় আগে মিসরের ফারাওদের কাছে এটি ছিল জনপ্রিয় এক খাবার। তখন কেবল অভিজাতরাই এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারত। মাশরুম এক প্রকার সাদা সবজি। তবে খাদ্যগুণ বিবেচনায় এর অবস্থান সবজি ও মাংসের মাঝামাঝি হওয়ায় এটিকে সবজিমাংস নামেও অভিহিত করা হয়। এটি ভিটামিন ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। কোনো ব্যক্তির দৈনিক যে পরিমাণ ভিটামিন গ্রহণ করা প্রয়োজন তা মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুমে আছে ১৯ থেকে ৩৫ শতাংশ প্রোটিন। এছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফলিক অ্যাসিড ও লৌহ। এতে চর্বি ও শর্করার পরিমাণ কম এবং আঁশ বেশি থাকায় ডায়াবেটিক রোগীদের আদর্শ খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। কোলেস্টেরল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোবাস্টাটিন ও এন্টাডেনিন থাকায় মাশরুম খাওয়া উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীদের জন্য ভালো। এছাড়া এটি ডেঙ্গুজ্বর ও হেপাটাইসিস-বি জন্ডিসের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। গর্ভবতী মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতেও মাশরুমের ভূমিকা অনন্য। মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড ও লৌহ থাকায় এটি রক্তশূন্যতা দূরীকরণেও কার্যকর। চীনে বর্তমানে ১১ প্রজাতির মাশরুম বিভিন্ন রোগে সরাসরি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের দেশেও মাশরুম গুটিবসন্ত, অ্যাজমা ও উচ্চ রক্তচাপজনিত চিকিৎসায় ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ ব্যাপকতা লাভ করেছে। অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম উৎপাদন শুরু না হলেও ৮ প্রকার মাশরুম চাষ হচ্ছে।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে মাশরুম একটি অপরিচিত সবজি। সঙ্গত কারণেই এর রান্নার প্রক্রিয়াটি অনেকের কাছেই অজানা। ভালোভাবে রান্না করা হলে এটি আমাদের মুখেও স্বাদ লাগবে। মাশরুম রান্নার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত প্রণালী হলো-

ক) মাশরুম সবজি

মাশরুম অন্যান্য দেশী সবজির সাথে মিশিয়ে রান্না করা যায়। এর জন্য যে পরিমাণে সবজি নিতে হবে-
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  শুকনো মাশরুম ২০ গ্রাম  
  আলু ১টি (৫০ গ্রাম)  
  মটরশুটি ১২০ গ্রাম  
  টমেটো ১৫০ গ্রাম  
  পেঁয়াজ ১০০ গ্রাম  
  আদা ১০ গ্রাম  
  রসুন ২ থেকে ৩ টি কোয়া  
  তেল ১ থেকে ২ চামচ  
  অন্যমসলা, লবণ প্রয়োজনমত  
         

রান্না প্রণালী


• শুকনো মাশরুম গরম পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে ;

• আলু, মটরশুটি, টমেটো ধুয়ে নিতে হবে। পেঁয়াজ, মটরশুটি ও আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• এরপর আলু, টমেটো ও পেঁয়াজ কুটতে হবে। পেঁয়াজ একটু তেলে ভেজে নিতে হবে ;
• আদা, রসুন বেটে নিতে হবে। মসলা তেলে ভেজে লবণ ও কাটা সবজি দিয়ে নাড়তে হবে ;
• এরপর একটু গরম পানি দিয়ে তরকারী সিদ্ধ করতে হবে ;
• মাশরুম টুকরা করে কেটে সিদ্ধ সবজির সাথে দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট রান্না করে তুলে নিতে হবে।

খ) মাশরুম বিরিয়াণী

মাশরুমের স্বাদ কিছুটা মাংসের মত। এজন্য মাশরুমের সাথে সবজি মিশিয়ে সহজেই সুস্বাদু বিরিয়াণী তৈরি করা যায়। মাশরুম বিরিয়াণী প্রস্তুত প্রণালী হলো-
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  পোলাউর চাল ১৫০ গ্রাম  
  মাশরুম ১০০ গ্রাম  
  গাজর ৫০ গ্রাম  
  মটরশুটি ৫০ গ্রাম  
  ফুলকপি ৫০ গ্রাম  
  পেঁয়াজ ১০০ গ্রাম  
  ধনেপাতা ২৫ গ্রাম  
  রসুন ৫ গ্রাম  
  আদা ৫ গ্রাম  
  ১০ কাঁচা মরিচ ৫ গ্রাম  
  ১১ টক দই ৫০ গ্রাম  
  ১২ তেল/মাখন ৫০ গ্রাম  
  ১৩ অন্যমসলা, লবণ, পানি প্রয়োজনমত  
         

রান্না প্রণালী


• চাল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। মসলা বেটে নিতে হবে ;

• পেঁয়াজ সোনালী করে ভেজে রাখতে হবে ;
• মাশরুম পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে ভেজে রাখতে হবে ;
• সবজি ধুয়ে কেটে সিদ্ধ করে নিতে হবে ;
• চাল তেলে ভেজে সামান্য পানি দিয়ে প্রায় রান্না করার অবস্হায় নিয়ে আনতে হবে ;
• দই ভাল করে ফেটে ধনে পাতা কুচির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে ;
• এরপর সিদ্ধ সবজি, মাশরুম, দই মিশাতে হবে ;
• একটি পাত্রে আবার খানিকটা তেল/মাখন দিয়ে চুলায় দিতে হবে। এরপর সবজি, মাশরুম পেঁয়াজ এর মিশ্রণ দিয়ে একটু নাড়তে হবে এবং প্রায় সিদ্ধ পোলাউর চাল মিশিয়ে ১০ মিনিট হালকা আঁচে চুলায় রাখতে হবে ;
• তুলে পোলাউর উপর ভাজা পেঁয়াজ, কাজু বাদাম ইত্যাদি মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।

গ) মাশরুম ফ্রাই

নাস্তা হিসেবে মাশরুম ফ্রাই চা-এর সাথে পরিবেশন করা যায়। ইফতারীর সময় বেসনের সাথে সবজি দিয়ে পাকুড়া তৈরির মত করে সবজির পরিবর্তে মাশরুমের পাকুড়া তৈরি করা হলে তা যথেষ্ট সুস্বাদু হবে।
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  মাশরুম ১০ থেকে ১২টি  
  ডিম ১ টি  
  বেসন ১ থেকে ২ টেবিল চামচ  
  লবণ, গোল মরিচ গুড়া, সয়াবিন তেল পরিমাণ মত  
         

রান্না প্রণালী


• মাশরুম ধুয়ে পরিষ্কার করে পানি ছাড়িয়ে নিতে হবে ;

• একটি পাত্রে ডিম ভেঙ্গে বেসন, লবণ, গোল মরিচের গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে প্রয়োজনমত পানি দিয়ে ঘন করে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। মাশরুমগুলো মিশ্রণে ভালোভাবে ডুবিয়ে নিতে হবে ;
• পপাত্রে তেল গরম করতে হবে এবং একত্রে কয়েকটি মাশরুম ভেজে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।

ঘ) মাশরুম হালিম

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরণের ডালের সাথে মাংস মিশিয়ে হালিম তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে হালিমের জন্য প্রয়োজনীয় ডালের সাথে মাশরুম মিশিয়ে মাশরুমের হালিম বানানো যায়। তাছাড়া পাতলা ডালের সাথে মাশরুম দিয়ে মাশরুম স্যুপও তৈরি করা যেতে পারে।
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  মুগ ডাল ১২৫ গ্রাম  
  মসুর ডাল ২৫০ গ্রাম  
  ছোলার ডাল ১২৫ গ্রাম  
  মাশরুম তাজা ৫০০ গ্রাম (শুকনো হলে ৫০ গ্রাম)  
  পেঁয়াজ কুঁচি, আদা, রসুন, জিরার গুড়া, হলুদের গুড়া, তেজপাতা, লবণ ও পানি পরিমাণ মত  
         

রান্না প্রণালী


• মাশরুম ধুয়ে পানি ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে রাখতে হবে ;

• ডালগুলো ধুয়ে পানিতে ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• মুগ ডাল সামান্য ভেজে ধুয়ে মসুর ও ছোলার ডালের সাথে মিশিয়ে ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করার সময় ডালের সাথে আদা, রসুন, পেঁয়াজ কুঁচি ও লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। ডাল খুব ঘন করা যাবে না ;
• কাটা মাশরুম পেঁয়াজ কুচির সাথে ১ থেকে ২ মিনিট গরম তেলে হালকাভাবে ভেজে নিতে হবে। তারপর সিদ্ধ ডালের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে ;
• সামান্য জিরার গুড়া এবং গোল মরিচের গুড়া মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।


ঙ) চিকেন মাশরুম স্যুপ

আমাদের দেশের রেস্তেরাগুলোতে চিকেন কর্নস্যুপ অত্যন্ত জনপ্রিয়। চিকেন কর্নের সাথে মাশরুম দিলে স্যুপের পুষ্টিমাণ বাড়বে এবং স্বাদও ভিন্নতর হবে। চিকেন মাশরুম স্যুপ তৈরি করার জন্য নীচের উপরকরণগুলোর প্রয়োজন হবে।
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  মাশরুম ২৫০ গ্রাম  
  পেঁয়াজ ২টি  
  মুরগীর স্টক ৪ কাপ  
  পানি ৩ কাপ  
  কর্নফ্লাওয়ার ১ কাপ  
  বাটার অয়েল ২০ গ্রাম  
  আদা ২৫ গ্রাম  
  লবণ, টেস্টিং সল্ট পরিমাণ মত  
         

রান্না প্রণালী


• মুরগির স্টক তৈরি করার জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের একটি মুরগি ২.৫০ লিটার পানিতে পরিমাণ মত লবণ আদা দিয়ে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে। মাংসগুলো নরম হয়ে আলাদা হয়ে গেলে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে মুরগির হাড়গুলো আলাদা করতে হবে এবং মাংস স্টক পানির সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে নিতে হবে ;

• মাশরুম ও পেঁয়াজ চাকা করে কেটে নিতে হবে। তারপর বাটার অয়েল দিয়ে হালকাভাবে ভেজে নিতে হবে ;
• এবার এসব ভাজা মাশরুম, মুরগির হাড় ও মাংস সিদ্ধ স্টক পানিতে ৫ থেকে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজন মত লবণ ও একটি কাপে অল্প পানিতে কর্নফ্লাওয়ার গুলিয়ে নিতে হবে ;
• ২ থেকে ৩ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে ;
• প্রয়োজন মত টেস্টিং সল্ট দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

চ) মাশরুম চিংড়ি

চিংড়ি মাছ এমনিতেই যথেষ্ট সুস্বাদু মাছ। এ মাছের সাথে মাশরুম রান্না করলে একটু ভিন্ন স্বাদের তৈরি করা যায়। নীচে রান্নার উপকরণ ও প্রণালীর বর্ণনা দেওয়া হলো-
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  মাশরুম ৫০ গ্রাম  
  মাঝারি ধরণের চিংড়ি ২০০ গ্রাম  
  পেঁয়াজ , মরিচ, লবণ, আদা, হলুদ, সয়াবিন তেল পরিমাণ মত  
         

রান্না প্রণালী


• মাশরুম ধুয়ে কেটে পানি ছাড়িয়ে রাখতে হবে ;

• চিংড়ি মাছের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• তেল, লবণ ও প্রয়োজনীয় মসলা দিয়ে মাছ তেলে ভেজে নিতে হবে ;
• মাছ প্রায় হলে আসলে মাশরুম চিংড়ি মাছের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে ;
• ৫ থেকে ৭ মিনিট নেড়ে নামিয়ে নিতে হবে ;
• গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।


ছ) মাশরুম স্যান্ডউইচ

স্যান্ডউইচ বর্তমানে শহরের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়। দ্রুত তৈরি এবং সহজে বহন করার কারণে স্যান্ডউইচ সব বয়সের মানুষের কাছে পরিচিত। স্যান্ডউইচ সাধারণত: মাংস, মাছ কিংবা ডিম দিয়ে হয়। মাছ, মাংস, ডিমের পরিবর্তে মাশরুম ব্যবহার করা হলে স্যান্ডউইচ স্বাদ ও পুষ্টিমাণ ভিন্নরকমের হবে। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তারা এই স্যান্ডউইচ খেতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে বাটারের পরিবর্তে কোলস্টেরল মুক্ত কর্ন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  মাশরুম ৫০ গ্রাম  
  বাটার ৫০ গ্রাম  
  পেঁয়াজ, লবণ পরিমাণ মত  
  পাউরুটি ১টি  
         

রান্না প্রণালী


প্রথমে মাশরুমগুলো স্লাইস করে কেটে নিতে হবে। তারপর ফ্রাইপ্যানে বাটার/কর্ন অয়েল বা ভেজিটেবল ঘির মধ্যে পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে মাশরুমগুলো হালকা করে ভেজে নিতে হবে ;

তারপর দুই পিস পাউরুটির ভিতর ভাজা মাশরুমগুলো সুন্দর করে স্প্রেড করে দিন। এরপর মিয়োনিজ, টমেটো, পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

জ) মাশরুম ওমলেট

ডিম একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। ডিমের সাথে মাশরুম মিশালে সেই খাবারের মান ও গুণ দু-ই বৃদ্ধি পায়। নীচে মাশরুম ওমলেট রান্নার উপকরণ দেওয়া হলো-
         
  ক্রমিক নং উপকরণ পরিমাণ  
  মাশরুম ১০০ গ্রাম  
  বাটার ১৫ গ্রাম  
  ডিম ২টি  
  দুধ ১ থেকে ২ কাপ  
  লবণ ও মরিচ গুড়া পরিমাণ মত  
         

রান্না প্রণালী


• মাশরুম ধুয়ে পরিষ্কার করে কেটে নিতে হবে ;

• অল্প তাপে বাটার দিয়ে মাশরুমগুলো ৫ থেকে ৭ মিনিট ভেজে নিতে হবে ;
• ডিম ও দুধ একসঙ্গে ফেটে নিয়ে মাশরুমের কড়াইতে ঢেলে নিতে হবে ;
• প্রয়োজন মত লবণ ও মরিচের গুড়া দিয়ে ভাল করে নেড়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
• যাদের কোলস্টেরল সমস্যা আছে তারা ডিমের কুসুমটি বাদ দিয়ে সাদা অংশের সাথে মাশরুম মিশিয়ে পুষ্টিকর উপাদেয় ওমলেট তৈরি করে খেতে পারেন।

মাশরুমের আচার


• রান্না ছাড়াও তাজা মাশরুম তেল ও মসলা দিয়ে আচার বানিয়ে রাখা যায়। আচারের জন্য দুধ মাশরুম সবচেয়ে ভাল। এজন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে-

• তাজা মাশরুম পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে ;
• রসুন, আদা, গোল মরিচ ও সরষের গুড়া এবং গরম মসলা মিশিয়ে সামান্য তেলে মাশরুম ভেজে প্রায় শুকিয়ে ফেলতে হবে ;
• ঠান্ডা করে লবণ ও ভিনেগার মিশাতে হবে ;
• তেল গরম করে ঠান্ডা করতে হবে। সম্পূর্ণ মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে তেলের মধ্যে রাখতে হবে ;
• বোতলে ঢুকাবার আগে বোতলটি ভালোভাবে ঢাকনাসহ সিদ্ধ করে নিতে হবে।
• বাংলাদেশে খাদ্যে স্বয়ংভরতা অর্জন করেছে কিন্তু এথনো পুষ্টিতে সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হযনি। বাংলাদেশের পুষ্টিতে সহজ সরল এবং স্বল্প পুজিতে পুষ্টির উপকরণ যোগান দিতে মাশরুম অনন্য। এখন প্রয়োজন উদবুদ্ধকরণের মাধ্যমে মাশরুম উৎপাদন, বিপনণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং এর ব্যবহার সংশ্লিষ্ট সকলের কার্যকর ভুমিকা। মাশরুম দিয়ে এদেশের পুষ্টি এবং কৃষিকে সমৃদ্ধ করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। মাশরুম সমৃদ্ধ পরিকল্পিত কৃষির প্রত্যাশা আমাদের সবার কাম্য।

Spicy mushroom fried rice মসলাযুক্ত মাশরুম ভাজা ভাত !!!

 
Image
 
Image
 
Image

Prep Time: 30 minutes.  সংগ্রহ সময়: ৩০ মিনিট.       

Cook Time: 30 minutes. রান্নার সময়: ৩০ মিনিট.

Total Time: 60 minutes. মোট সময়: ৬০ মিনিট

Makes  5  servings.পরিবেশন করুন  ৫ জনের  জন্য.

Ingredients: উপকরন:

  • 1/4 kg mushrooms, cut into  small size. ছোট আকার টুকরো ১/৪ কেজি মাশরুম,.
  • 1 tbs ginger,garlic chopped ১ টে; চামচ আদা, রসুন কুটা .
  • 1 tsp coriander powder. ১ চা চামচ ধনে গুঁড়া.
  • 1 tsp cumin powder. ১ চা চামচ জিরা গুঁড়া.
  • 1 tsp all spices  (garam masala) powder. ১ চা চামচ সব মশলা গুঁড়া.
  • 1/2 cup soy sauce. ১/২  কাপ সয়াসস.
  • Salt to taste.  লবণ স্বাদ মত.
  • 2 large onion, large sliced. ২ টি বড় পেঁয়াজ বড় টুকরা করা.
  • 3/4 kg cooked basmati rice. ৩/৪ কেজি বাসমতী চালের ভাত.
  • 100 g butter. মাখন ১০০ গ্রাম.
  • Sugar-1 tea spoon. চিনি ১ চা চামচ.
  • Green chili 10, slice. ১০ টি কাঁচা মরিচ ফালি.
  • 1/2 cup coriander leaves.১ /২ কাপ ধনে পাতা.
Method: পদ্ধতি:


1. Heat butter in a pot on medium heat . Add ginger, garlic chopped cook for 1 min.  চুলাতে মাঝারি তাপের উপর একটি পাএের মধ্যে মাখন গরম করতে হবে. এতে আদা ও রসুন কুচা যোগ করুন,  মিশিয়ে ১ মিনিট এর  জন্য রান্না করতে হবে.
 
Image

2. Add chili, mushroom, onion, sugar, salt. কাঁচা মরিচ, মাশরুম, পেঁয়াজ, চিনি, লবণ যোগ করুন.

Image

3. Give a nice stir and cook for two mins. একটা চমৎকার নড়া দিন এবং দুই মিনিট জন্য রান্না করা.

Image
 
4. When water gets evaporated add soy sauce. পানি শুকিয়ে গেলে সয়াসস যোগ করুন.
 
Image

5.  Saute till the onions begin to turn a pale golden brown in color.  পেঁয়াজ সাঁতলান রঙের একটি ফ্যাকাশে সুবর্ণ বাদামী রং না হওয়া পর্যন্ত  নাড়া চালু  রাখুন

Image

6. Now add boiled rice, then lift the pot 2-3 times like saute. Don’t use any spoon.  এখন সেদ্ধ চাল, দিয়ে তারপর পাত্র টি কে দুই পাশে ধরে ভাল করে ঝাকিয়ে বা সাঁতলানো মত ২-৩ বার করে নিন. কোন চামচ ব্যবহার করবেন না.

Image

Image

7. Add coriander leaves then lift the pot 2-3 times like saute or mix evenly. ধনে পাতা দিয়ে তারপর পাত্র টি কে দুই পাশে ধরে ভাল করে ঝাকিয়ে বা সাঁতলানো মত ২-৩ বার করে নিন বা সমানভাবে মিশিয়ে নিন.

Image

Image

8.  Your mushroom fried rice is ready to eat. Serve with yogurt salad and tomato gravy. আপনার মটন বিরিয়ানি প্রস্তুত. দই সালাদ এবং টমেটো ঝুলের  সঙ্গে পরিবেশন করুন.